পক্ষিরাজ ঘোড়া

পক্ষিরাজ ঘোড়া

Tags
bengali-folktale
Date
January 21, 2024
Language
Bengali

সুকুমার রায়ের হাতিমি, হাঁসজারু ইত্যাদি আজব সব প্রাণীর তালিকায় এর নাম ছিল না ঠিকই, তবে রূপকথার গল্পে পাখি আর ঘোড়ার সমন্বয়ে তৈরি এই প্রাণীটির দেখা মেলে প্রায়ই। ডানাবিশিষ্ট যে ঘোড়া মুহূর্তে দূর-দূরান্তে পৌঁছে যায়, সে-ই তো পঙ্খীরাজ, কিংবা পক্ষিরাজ। অতীব সুন্দর চেহারার এই অশ্বটিকে স্বর্গের দূত বলেই মনে হয় যেন।

ঠাকুরমার ঝুলির ডালিমকুমার হোক বা লাল কমল, নীল কমল– সকলের কাছেই থাকে একটি করে পক্ষিরাজ। এ মূলত রূপকথার রাজপুত্তুরদের ব্যক্তিগত বাহন। পক্ষিরাজ উড়তে পারে, তীর-বজ্রের গতিতে দূর থেকে আরো দূরে পৌঁছিয়ে দিতে পারে তার উপর চড়ে বসা যে কাউকেই- "ঝড়ের গতি কোন ছার, পক্ষিরাজে আসন যার।"

তবে কপাল মন্দ হলে মাঝে মাঝে মন্ত্রের মাধ্যমে বশ করে পক্ষিরাজকে দিয়ে দুষ্টু রাক্ষসী রাণী বেশ কিছু কাজকর্মও করিয়ে নেয়, বাজিতে ধরা সম্পত্তির ভূমিকাও পালন করতে হয় তাকে–

“পক্ষিরাজ, পক্ষিরাজ উড়ে চলে যা, পাশাবতীর রাজ্যে গিয়া ঘাস জল খা।”

এতে করে অবশ্য একটা জিনিস স্পষ্ট যে বিশেষ প্রজাতির ঘোড়া হলে পক্ষিরাজের খাওয়া-দাওয়া সাধারণ ঘোড়াদের মতোই! এমনকি কোনো পক্ষিরাজকে কখনো কথা বলতে দেখা যায় না, তার ডাকও ঘোড়ার হ্রেষার মতোই–

“ডালিমকুমার যাইতেছেন, যাইতেছেন, এক পাহাড়ে উঠিয়া দেখেন পক্ষিরাজ। ছুঁইতেই আবার প্রাণ পাইয়া পক্ষিরাজ “চিঁহী হিঁ!” করিয়া উঠিল। রাজপুত্র বলিলেন, “পক্ষিরাজ, এইবার চল।”

শুধু বাংলা রূপকথা নয়, গ্রিক পুরাণেও এর দেখা মেলে ভিন্ন এক নামে। পার্সিয়াস যখন সর্পকেশী নারী মেডুসার মাথা কেটে ফেলেন, তখন তার কণ্ঠনালীর রক্ত থেকে জন্ম নেয় পেগাসাস বা পঙ্খীরাজ। গায়ের রং ধবধবে সাদা এবং তার পিঠে দুটো সুন্দর সাদা পাখা। পুরাণ অনুযায়ী এমন বিশ্বাসও রয়েছে যে গ্রিক দেব-দেবী পসাইডন এবং মেডুসার সন্তান পেগাসাস। গ্রিক মিথে পেগাসাস অমর, বাংলা রূপকথায়ও পক্ষিরাজকে রাক্ষসীর পেট থেকে আবার জ্বলজ্যান্ত বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।