“ক্ষীরের সাগরে ক্ষীরের ঢেউ ঢল ঢল করে লক্ষ হাজার পদ্মফুল ফুটে আছে থরে ঢেউ থই থই সোনার কমল, তারি মাঝে কী? দুধের বরণ হাতির মাথে গজমোতি।”
কোথায় মিলবে এমন পাহাড়, যার নিচেই জমা থাকে নোনতা নয়– মিঠে সাগর? এমনও কি সম্ভব? রূপকথায় বোধহয় সবই হয়। ঠাকুরমার ঝুলির দুই কথক পাখি শুক-সারির কথোপকথনে জানা যায় ক্ষীর সাগরের ভৌগোলিক ঠিকানা,
“দুধ-মুকুটে ধবল পাহাড় ক্ষীর-সাগরের পাড়ে”।
ক্ষীরের সাগর মূলত অবস্থিত ধবল পাহাড়ের নিচে। ধবল পাহাড়ের উপরে দুধের সর থক থক করে জমা থাকে। তার সাথেই প্রবাহিত হয় দুধের সাগর। হিন্দু পুরাণে দেবতাদের অমৃত মন্থনের ঘটনায়ও ক্ষীর-সাগরের উল্লেখ পাওয়া যায়। এতে মন্থনদণ্ড হিসেবে তারা ব্যবহার করেছিলেন মন্দর পর্বত আর মন্থনরজ্জু, মানে রশি হয়েছিল বাসুকী নাগ।
এই ক্ষীর সাগরের নিচে লুক্কায়িত আছে রূপকথার বহু রহস্য। কখনো সেখানে সোনার মাছ হয়ে থাকে ছদ্মবেশী রাজপুত্র, যার অভিশাপ মুছতে প্রয়োজন হয় জাদুস্পর্শ। শীত-বসন্ত গল্পে রাজকুমার বসন্ত ক্ষীর সাগরে পৌঁছাতে লেগে যায় বারো বছর তেরো দিন। সেখানে গিয়েই সে উদ্ধার করে এক অমূল্য গজমোতি। এর গল্প শুনব আরেকদিন। আপাতত নটে গাছটি মুড়োলো, ক্ষীর সাগরের গল্পও ফুরোলো!