আচিকদের বিশ্বাস, মানুষ চাইলেই যেকোনো পশুপাখিতে রূপ নিতে পারে। তা সে বাঘ হোক বা হাতি, হরিণ হোক বা শেয়াল। মানুষ চাইলে হতে পারে উড়ন্ত কাঠবেড়ালিও! তবে এর মানে এই নয় যে জ্বলজ্যান্ত মানুষ সোজা কাঠবেড়ালি হয়ে বসে থাকবে। রূপান্তরটা ঘটে স্বপ্নের মাঝে। মানুষ ঘুমালে তার অস্তিত্বের একটা অংশ নাকের ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে যায়, আর ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ায়। অস্তিত্বের এই রূপটিকে বলা হয় ‘জাবিরং’ বা ‘জাবিচি’।
তাই এসময়টাতে মানুষ মানসিকভাবে হয়ে যেতে পারে অন্য যেকোনো জীবন্ত প্রাণী। আর ঘুম থেকে জাগার পরও সেই বাঘ কিংবা সিংহের স্মৃতি তার মধ্যে রয়ে যায়, যে গল্প সে শোনাতে পারে অন্য যে কাউকে। একবার যে মানুষ বাঘ হয়ে যায়, সে সারাজীবনই ঘুমিয়ে গেলে, স্বপ্নে বাঘের ভূমিকা পালন করে।
এমনটাও বলা হয় যে প্রাচীন আচিকেরা ইচ্ছেমতো নিজেদের শরীরকে বাঘ, কুমীর, সাপ কিংবা যেকোনো প্রাণীতে রূপ দিতে পারতো। শুধু তাই নয়, এসব প্রাণীর উপর হুকুম দিয়ে ইচ্ছেমতো দুঃসাহসিক সব কাজও করিয়ে নিতে পারতো তারা। অনেকটা রূপকথার ওয়েরউলফের সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে, তাই না? ওয়েরউলফরাও কিন্তু পূর্ণিমা রাতে মানুষ থেকে হয়ে যায় ভয়ংকর সব নেকড়ে।
(গারো লোককথা থেকে)