নৌকা মানেই তো জলের মধ্যে বয়ে চলা এক জলযান– তা সে ময়ূরপঙ্খী, শূকপঙ্খী যে নাওই হোক না কেন। কিন্তু না, ঠাকুরমার ঝুলি থেকে বেরিয়ে এলো আরো এক নৌকা, যা চলে বাতাসের মধ্য দিয়ে শোঁ শোঁ করে। তাইতো একে ডাকা হয় পবনের নাও। বাংলা গানে মন পবনের নাও যদিবা জলে চড়েও বেড়ায়, রূপকথার পবনের না কিন্তু আকাশপথেই থাকে।
“ঘ্যাঁঘর চরকা ঘ্যাঁঘর রাজপুত্র পাগল হটর হটর পবনের না, মণিমালার কাছে যা।”
আর এই পবনের নায়ের চালক কোনো মাঝি নয়, বরং এক বুদ্ধিমান বুড়ি। তার পেঁঁচো বলে একটি ছেলে আছে বলে তাকে সবাই ডাকে ‘পেঁচোর মা বুড়ি’। চাঁদের বুড়ি ছাড়াও রূপকথার আরেকটি যে বুড়ির কাছে চরকি আছে, আর যে যখন তখন সুতো কাটে– সেই হচ্ছে পেঁচোর মা কিংবা চরকি বুড়ি। পবনের নায়ে ওঠার আগেই সে সাথে নিয়ে নেয় একরাশ তুলা আর একটি চরকা। চরকায় যত সুতা কাটে ঘ্যাঁঘর ঘ্যাঁঘর, ততই বেগে চালু হয় পবনের না ‘হটর হটর’! আর তারপর সরোবরের ধারে বসে বুড়ি চরকা কাটে, আকাশপথে এগিয়ে চলে এই নৌকা (নাকি রূপকথার উড়োজাহাজ?); এই পবনের না সাথে করেই বুড়ি নিজের যত উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করে যায়, রাজকন্যার সাথে দিতে চায় নিজের ছেলের বিয়ে।