Golden Anees

Golden Anees

Bengali Title

সোনার আনিস

Category
Bengali Folktale

English

Once upon a time, there lived a kind and noble king. Despite having a powerful army and great wealth, there was a void in his life, for he had no children. Over the years, the king had married seven different queens, but to his sorrow, none of them could give him a child. He sought counsel from healers and saints across the kingdom, but no remedy could be found. In his desperation, the king decided to venture into the dense jungle in search of answers. His seven queens pleaded with him not to go, but he set off with nothing but the clothes on his back.

After months of wandering in the wild, the king encountered a wise sage (মুনি) deep in meditation. Falling to his knees, the king begged the sage for a solution. The sage, initially unwilling to help, threatened to cast a curse. However, the king's repeated pleas eventually moved the sage's heart. He revealed the secret of an enchanted banana tree hidden in the heart of the forest. To bless his queens with children, the king must gather seven bananas from this magical tree. The sage, though, required a price for this knowledge: one of the king's sons in twelve years' time. The king considered the sage's offer, thinking that having six children was worth the cost of one. He returned to his palace with the enchanted bananas and followed the sage's instructions.

Twelve years passed, and the king was now the father of seven handsome princes. His favorite was Anees, the youngest. But when the sage came to collect his due, Anees was the chosen one. With a heavy heart, the king watched as the sage and his beloved son, Anees, disappeared into the jungle.

They walked for days until they reached a secluded area with a small hut by a large tree. It was well past sunset when they arrived, and the sage advised Anees to make his bed inside. Throughout the night, wild animals called out, but the sage assured him that the hut was protected by a powerful spell.

The following morning, Anees awoke to discover that the sage had already departed for his daily meditation. He decided to explore his surroundings, and what he stumbled upon filled him with dread. The nearby area was scattered with numerous human skulls. "There must be a man-eating tiger in this jungle," Anees thought with a shiver. Suddenly, an unexplained voice called out to him. He scanned the surroundings but found no one. The voice beckoned again, and Anees realized it coming from a skull resting on the ground. The skull disclosed that there were no man-eating tigers in the jungle. Instead, the sage collected someone from a neighboring kingdom every year and offered them as a human sacrifice to the gods in exchange for his magical powers. The young prince welled up with tears at the prospect of impending doom. The skull consoled the distressed lad and provided him with counsel on how to evade his fate.

On the day of the sacrifice, the sage instructed Anees to bathe in a nearby pond filled with oil. He followed the sage's guidance and reached the spot. There were indeed two ponds, one containing oil and the other filled with milk. Remembering the skull's advice, Anees bathed in the pond filled with milk, avoiding being turned into a sacrificial goat. When Anees returned to the hut, the sage realized his plan had failed. He tried to seize Anees, but the young prince was too quick. Anees locked the sage inside and fled into the jungle, where he followed the skull's instructions to collect three vital items from the sage's temple: a resurrection stone (জীয়ন পাথর), an invisibility cap (গায়েবি টুপি), and a talismanic ring (তিলিশমাতি আংটি).

Afterward, Anees proceeded to a nearby well, where he gathered a bucket of water and cleansed the resurrection stone with it. He then returned to the location where he had initially found the skulls and splashed the water in all directions. Almost instantly, the bones began to rattle and, within moments, their flesh and muscles miraculously regenerated. All the people who had fallen victim to the sage's sacrifices were brought back to life. Having repaid the skull for saving his life, Anees embarked on his journey back home.

On his way, the young prince rested by a riverbank and fell asleep. He awoke to the sound of horses and saw a chariot (রথ) descending from the sky, carrying seven beautiful fairies (পরী) who had come to bathe in the river. Not wanting to startle them, Anees put on his invisibility cap and watched from the water. He was entranced by their beauty, particularly the youngest fairy. Startled, Anees bumped into her, causing her to spill water on his face and making him visible. The fairies were repulsed by the mortal behaving like a peeping Tom. Furthermore, according to fairy customs, allowing a man to drink water from your hands sealed a marital bond. Despite their reluctance, the fairies brought Anees with them to their kingdom. Their father, the king of the fae, felt embarrassed and initially declined to publicly bless the marriage. He subjected the human prince to a series of challenging tests to assess if a mere mortal was worthy of his daughter. Fortunately, aided by his talismanic ring, Anees effortlessly passed each test. Eventually, the king relented and approved of the union. Anees then recounted his entire story to his new wife and father-in-law. Hearing this, the king of the fae took pity on the young lad and ordered his royal chariot to transport the human prince and his fairy wife back to his parents.

বাংলা

এক যে ছিল রাজা। রাজা ছিলেন বড় মহৎ আর দয়ালু। তার রাজ্যে ঘোড়াশালে ঘোড়া, হাতিশালে হাতি, রাজকোষে ছিলো হিরে মুক্তো পান্না চুন্নি। তবু রাজার মনে বড় দুঃখ। এত ক্ষমতা, এত প্রাচুর্য, এত সম্পদ, কিন্ত তাঁর যে কোন সন্তান নেই! সন্তানের আশায় রাজা একে একে সাত রাণী বিয়ে করলেন। আফসোস! বিধি তাঁর প্রতি সদয় হলোনা। বছরকে বছর যায়, সন্তানের জন্য রাজ্যের হেন বৈদ্য নেই, হেন সন্নাসী নেই যার কাছে রাজা ধরনা দেননি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়না। হতাশায়, ক্ষোভে, রাজা সমাধানের খোঁজে বনে বেরিয়ে পড়লেন। রাণীরা বাধ সাধলেন, কিন্তু রাজা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রাণীদের চোখের পানি উপেক্ষা করে তিনি এক কাপড়ে বনে চললেন। মাসের পর মাস গেল, রাজা ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ একদিন গভীর ধ্যানে থাকা এক মুনির সন্ধান পেলেন। মুনির সামনে হাটুঁ গেড়ে বসে রাজা বললেন, “আমায় দয়া করুন বাবা। আমার মনে কোন শান্তি নেই। বছরের পর বছর সন্তানের আশায় পাগলপ্রায় আমি আজ রাজা থেকে পথের ভিখিরিতে পরিণত হয়েছি। আমি ভিক্ষা চাইছি বাবা, আমায় এর সমাধান দিন”। মুনি বলল, “খবরদার! তুই আমার ধ্যানে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিস। যা এখান থেকে, নইলে আমার অভিশাপে তোর অনিষ্ট হবে বলছি”। রাজা তবু অনুনয় বিনিনয় করতে লাগলেন। অবশেষে রাজার আন্তরিক অনুরোধে মুনির মন গলল। তিনি বললেন, “তবে শুন, এই বনের গভীরে আছে এক জাদুকরী কলাগাছ। এই গাছ থেকে সাতটি কলা নিয়ে তোর রাণীদের খেতে দিবি। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের কোল আলো করে ছেলেসন্তান আসবে। তার বদলে তোকে মূল্য দিতে হবে। বারো বছর সময় পাবি, এরপর তোর একজন ছেলেকে আমি নিয়ে যাবো”। রাজা মুনির প্রস্তাবে চমকে গেলেন। কিন্তু কী আর করেন, ভাবলেন, একটি সন্তানের মূল্যে হলেও ছয়টি সন্তান তো পাবেন তিনি। মুনির কথামতো জাদুর কলাগুলো নিয়ে প্রাসাদে ফিরে গেলেন।

ক্রমে ক্রমে বারো বছর পার হলো। রাজা সাতজন ফুটফুটে রাজপুত্রের বাবা হলেন। ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট আনিস তাঁর সবচেয়ে প্রিয়তম। কিন্তু হায়! কপালের লিখন, যায় না খন্ডন। মুনি তার পাওনা নিতে এসে আনিসকেই পছন্দ করলেন। রাজা কী আর করেন, ভগ্ন হৃদয়ে দুজনকে বিদায় দিলেন। বেশ কিছুদিন হাঁটার পর মুনি আনিসকে নিয়ে বনের মধ্যে একটি নির্জন জায়গায় পৌঁছালেন। সেখানে কেবল একটি বটগাছ ও তার পাশে একটি কুটির। তারা যখন কুটিরে প্রবেশ করলো, তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে গিয়েছে। মুনি আনিসকে তার ঘুমানোর জায়গা দেখিয়ে দিলো। ক্লান্ত আনিস তখনই শুয়ে পড়লো। কিন্তু ঘুমানো তো দুরের কথা, সারারাত সে বিভিন্ন বন্য জীবজন্তুর ডাকে ভয়ে কাঠ হয়ে রইলো। মুনি তাকে বললো, “ভয় পেওনা। এই কুটিরটি জাদুমন্ত্রবলে সুরক্ষিত। জীবজন্তুরা তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা”। মুনির কথায় আনিস আশ্বস্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেল। রাত কেটে ভোর হলো। সকালে ঘুম ভেঙ্গে আনিস দেখলো, মুনি তার আগেই উঠে বটগাছের নিচে ধ্যানে মগ্ন। সে ভাবলো, “ভালোই হলো। আজ তাহলে কুটিরের আশপাশটা একটু ঘুরে আসি”। যেই ভাবা সেই কাজ, আনিস কুটিরের পাশের বনে ঢুকে পড়লো। কিছুক্ষণ হাটাঁর পর সে একটি খালি জায়গায় নিজেকে আবিষ্কার করলো। আনিস অবাক হয়ে দেখলো জায়গাটিতে অনেকগুলো মড়ার খুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। “নিশ্চয়ই এই জঙ্গলে একটি মানুষখেকো বাঘ রয়েছে”, আনিস ভয়ে ভয়ে চিন্তা করলো। হঠাৎই সে শুনলো কে যেন তাকে ডাকছে, “আনিস”। আনিস আশেপাশে অনেক খুঁজেও কাউকে পেলোনা। “আনিস, এদিকে এসো”, আবারো সেই গায়েবি কন্ঠ বলে উঠলো। এবার আনিস বুঝতে পারলো পাশেই মাটিতে পড়ে থাকা একটি খুলি থেকে আওয়াজটি আসছে। সে এগিয়ে গিয়ে বললো, “কে আপনি? আমায় কেনো ডাকছেন?” খুলিটি উত্তর দিলো, “আমি তোমারই মত এক মানুষ ছিলাম। মুনির খপ্পরে পড়ে আজ আমার এ হাল। প্রতি বছর মুনি পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলো থেকে মানুষ ধরে এনে দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলি দেয়। এভাবেই সে তার জাদুক্ষমতা বজায় রাখে”। খুলির কথা শুনে বালক রাজপুত্র কেঁদে উঠলো। হায়! তার কী হবে? মুনি যে সামনে তাকেই বলি দেবে! খুলিটি আনিসকে শান্তনা দিয়ে বললো, “চিন্তা কোরো না, বাঁচতে যদি চাও তবে আমার কথা মন দিয়ে শুনো”। বলির দিন মুনি আনিসকে পাশের একটি তেলের পুকুরে গোসল করে আসতে বললেন। মুনির কথামতো আনিস সে জায়গায় পৌঁছে দেখলো সেখানে দুটি পুকুর, একটি তেলের ও একটি দুধের। খুলির পরামর্শ মেনে আনিস তেলের পুকুরে না নেমে দুধের পুকুরে গোসল করলো। কুটিরে ফেরত আসার পর আনিসকে দেখে মুনি বুঝতে পারলো তার সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। “তবে রে”, বলে যেইনা মুনি তাকে ধরতে যাবে, অমনি আনিস দ্রুত পাশ কাটিয়ে মুনিকেই কুটিরে বন্দি করে ফেললো। এরপর সে খুলির কথামতো জঙ্গলের মধ্যে মুনির গোপন মন্দির থেকে তিনটি জিনিস সংগ্রহ করলো, একটি জিয়ন পাথর, একটি গায়েবি টুপি ও তেলেশমাতি আংটি। তারপর আনিস কাছের এক কুয়ো থেকে এক বালতি পানি নিয়ে জীয়ন পাথরটি ধুলো। তারপর সে খুলিগুলো যেখানে পড়ে ছিলো সেখানে গিয়ে পানিটি চারিপাশে ছিটিয়ে দিতেই! পড়ে থাকা হাড়গোড়গুলো কাঁপতে শুরু করলো। দেখতে দেখতেই হাড়গুলোয় চামড়া মাংস লেগে জলজ্যান্ত মানুষ হয়ে উঠলো। মুনির বলি হওয়া সব মানুষ আবার প্রাণ ফিরে পেলো। এভাবে প্রাণ বাঁচানোর জন্য খুলিটির ঋণ শোধ করে আনিস বাড়ির পথ ধরলো। পথিমধ্যে বালক রাজকুমার একটি নদীর পাড়ে বিশ্রাম করতে থেমে ঘুমিয়ে পড়লো। ঘোড়ার খুরের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে সে দেখলো, আকাশ থেকে নেমে আসছে এক রথ। রথটি নদীর ধারে থেমে দাড়ালে তা থেকে নামলো সাতটি অপরুপ সুন্দরী পরী। তারা নদীতে গোসল করতে এসেছে। পরীদের চমকে না দিতে আনিস তার গায়েবি টুপি পরে অদৃশ্য হয়ে গেল। পরীদের দেখে, তাদের সৌন্দর্যে আনিস মুগ্ধ হয়ে গেল। বিশেষ করে সবচেয়ে ছোট পরীটির দিক থেকে সে তো চোখ ফিরাতেই পারছিলো না। মোহমুগ্ধ আনিস ভুলবসত পরীটির দিকে এগোতেই পরীটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায়। পরীর হাতের পানি আনিসের মুখে এসে পড়তেই আনিস দৃশ্যমান হয়ে উঠলো। পরীরা একজন মানুষকে এভাবে তাদের গোসলে উঁকি দিতে দেখে যথেষ্ট রাগান্বিত হলো। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে, পরীদের রীতিমতে কোন মানুষ কোন পরীর হাতের পানি পান করলে তারা দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই অনিচ্ছা সত্বেও তারা আনিসকে নিয়ে তাদের রাজ্যে ফিরে গেলো। তাদের বাবা, পরীরাজ্যের রাজা এ বিয়েতে খুবই অসন্তুষ্ট হলেন। তিনি এ বিয়ে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালেন। আনিসকে তার যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য পরীরাজ বিভিন্ন কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করলেন। তেলেশমাতি আংটি জোরে আনিস সহজেই সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলো। অবশেষে রাজা হার মানলেন। ধুমধাম করে দুজনার বিয়ে দিয়ে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করলেন। তখন আনিস তার নতুন বউ ও শ্বশুরকে তার জীবনের গল্প খুলে বললো। আনিসের কথা শুনে পরীরাজার তার প্রতি মায়া হলো। তিনি তার রাজরথে করে জামাই আর মেয়েকে আনিসের বাবা-মার কাছে ফেরত পাঠানোর আদেশ করলেন।