The legend of the Harong-Hurong caves

The legend of the Harong-Hurong caves

Bengali Title

হাড়ং-হুড়ং গুহার কিংবদন্তি

Category
Bengal Legend

English

Seven hundred years ago, the land we now know as Sylhet was part of the Gaur kingdom, called Srihatta at the time. This kingdom was shrouded in mystery, whispered to be a haven for sorcerers since ancient times. Even the king, Gaur Govinda, himself wielded magical powers. He was also a staunch Hindu, intolerant of other religions. One of his most unbending laws was the complete ban on cow slaughter within his realm. One day, King Govinda was enjoying the peace of his palace balcony when a crow landed nearby, a piece of meat stuck to its beak. The morsel tumbled down, landing right at the king's feet. It didn't take King Govinda long to realize the horrifying truth; the meat was beef. Fury consumed him, and he demanded the immediate capture of the culprit. After days of relentless search, the offender was identified: Sheikh Burhanuddin, a humble resident of Tulkikar. Burhanuddin, blessed with a child late in life after years of fervent prayers, had dared to slaughter a cow for his son's "Akika" ceremony, a blatant disregard for the king's law. This act of defiance sealed his fate, leading to his downfall. Burhanuddin, accused of the forbidden act of cow-slaughter, was dragged before the king's court. Found guilty, he was subjected to a barbaric punishment – his right hand was to be severed from his body. As if this cruelty wasn't enough, the merciless king demanded the execution of Burhanuddin's innocent son as well. With his hand ruthlessly chopped off and his heart shattered by the loss of his child, Burhanuddin sought justice. He journeyed to the court of Sultan Shamsuddin Firoz Shah, his voice filled with sorrow and anger as he recounted the horrific events. The Sultan, overwhelmed by the injustice Burhanuddin had endured, vowed to bring the tyrant king Gaur Govinda to his knees. He entrusted his own nephew, Sikandar Khan Ghazi, with the important task of leading an army against Gaur Govinda's kingdom. Despite attacking Gaur Govinda's kingdom twice, the brave Sikandar Khan Ghazi was forced to retreat due to the king's magical powers. Undeterred, the Sultan sent his skilled general, Syed Nasiruddin Shah, to conquer the tyrant. On Nasiruddin's way to invade, he met Hazrat Shah Jalal, who was equally appalled by Burhanuddin's tragic story. Deeply moved, Hazrat Shah Jalal joined the expedition with his followers, determined to bring justice. Together, they journeyed towards Srihatta with the Sultan's army. Upon reaching the Brahmaputra River, they found all boats destroyed, leaving them stranded. However, this did not deter Hazrat Shah Jalal. He and his companions, unwavering in their faith, used their flying prayer mats to cross the mighty river. But their journey wasn't without peril. As they reached the middle, the king's sorcerers unleashed a barrage of fiery arrows. Reacting swiftly, Hazrat Shah Jalal countered their attack with a powerful spell, shrouding themselves in a thick, impenetrable fog. Shielded from harm, they continued their journey and eventually reached the banks of the Barak River. With unwavering resolve, they employed their prayer mats once again, successfully crossing the final obstacle. King Gaur Govinda, realizing his impending defeat, sought escape through a tunnel called "Harang Hurong." However, the tunnel harbored a chilling myth. It was believed to be the dwelling place of 33 crore deities, and no one who dared to enter had ever returned alive. Such was the terror surrounding the tunnel that even venturing near it was considered taboo. Desperate and cornered, the king made his way towards the tunnel. Recognizing the gravity of his situation, he offered a singular Taka to each of the 33 crore deities, hoping to appease them and ensure his safe passage. Whether his act of appeasement or sheer luck played a role, none can say for certain, but the king emerged from the other end of the tunnel, escaping the clutches of defeat.

Location

বাংলা

আজ থেকে ৭০০ বছর আগের কথা। বর্তমান সিলেট তখন গৌড় রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং শ্রীহট্ট নামে পরিচিত ছিল। সেসময় এ অঞ্চলের রাজা ছিল গৌড় গোবিন্দ।

আদিকাল থেকেই জাদুটোনার জন্য এ রাজ্যটির বিশেষ খ্যাতি ছিলো। রাজা নিজেও জাদুটোনা জানতেন। ধর্মীয় দিক থেকে সে ছিল ভীষণ গোঁড়া এবং অন্য ধর্মের প্রতি ছিল অসহিষ্ণু। রাজার কড়া নির্দেশ ছিল তার রাজ্যে কোনোভাবেই গো-হত্যা করা চলবে না।

রাজা একদিন তার অন্দরমহলের বারান্দায় আরাম করার সময় একটি কাক উড়ে এসে বসলো বারান্দার রেলিঙয়ের ওপর। ঠোঁটে ছিল এক টুকরো মাংস। সেই মাংসের টুকরোটি পড়লো গিয়ে গৌড় গোবিন্দের সামনে। টুকরোটি যে গরুর মাংসের তা বুঝতে দেরী হলোনা রাজা গোবিন্দের। পেয়াদা ডেকে নির্দেশ দিলেন গরুর মাংসটির উৎস খুঁজে বের করতে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ধরা পড়লো অপরাধী। সেই অপরাধী হলো টুলকিকরের অধিবাসী শেখ বুরহানুদ্দিন। সন্তানহীন বুরহানুদ্দিন স্রষ্টার কাছে বহু মানতের পর বৃদ্ধ বয়সে একটি পুত্র সন্তান লাভ করেছিলেন। সেই সন্তানের আকিকা দিয়ে রাজার কড়া নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গোপনে একটি গরু জবেহ্ করেছিল। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার জন্য ।

গো-হত্যার অপরাধে বুরহানুদ্দিনকে বন্দী করে নিয়ে আসা হলো রাজদরবারে। বিচারে তাকে দোষীসাব্যস্ত করে তার ডানহাতটি কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলো । তার নিষ্পাপ শিশুপুত্রটিকেও হত্যার নির্দেশ দিলেন নির্দয় রাজা । নির্দেশমতো কেটে ফেলা হলো বুরহানুদ্দিনের ডানহাত। হত্যা করা হলো তার শিশুপুত্রকে। এমন ঘোরতর অন্যায়ের বিচার চেয়ে শেখ বুরহানুদ্দিন হাজির হলো সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের দরবারে। বুরহানুদ্দিনের মুখ থেকে সবটা শুনে সুলতান ভীষণ ব্যথিত হলেন। তিনি নিজের ভাতিজা সিকান্দার খান গাজীকে নির্দেশ দিলেন অত্যাচারি রাজা গৌড় গোবিন্দের রাজ্য আক্রমণ করে তাকে পরাজিত ও বন্দী করতে।

পর পর দুবার আক্রমণ করেও গৌড় গোবিন্দের জাদুশক্তির কাছে হার মানতে হলো। ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হলো সিকান্দার খান গাজীকে । সুলতান তখন তার সিপাহশালার সৈয়দ নাসিরুদ্দিন শাহকে পাঠান গৌড় গোবিন্দকে শায়েস্তা করার জন্য। সৈন্য নিয়ে গৌড় গোবিন্দের রাজ্য আক্রমণের উদ্দেশ্যে নাসিরুদ্দিন শাহ অগ্রসর হলে, পথিমধ্যে সোনারগাঁওয়ের কাছে হযরত শাহ জালালের সাথে দেখা হয়। তার কাছ থেকে বুরহানুদ্দিনের সাথে ঘটা হৃদয় বিদারক ঘটনাটি শুনে হযরত শাহ জালালও মর্মাহত হন এবং নিজের অনুসারীদের নিয়ে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

হযরত শাহ জালাল সুলতানের সৈন্যদলের সঙ্গে শ্রীহট্টের উদ্দেশ্যে রওনা হোন। ব্রহ্মপুত্রের তীরে পৌঁছে দেখলেন নদী পার হবার সব ব্যবস্থা রাজা আগেই বন্ধ করে দিয়েছেন। তখন হযরত শাহ জালাল নামাজ পড়ার জায়নামাজটি ব্যবহার করে নিজের সঙ্গীসাথীদেরকে নিয়ে নদী পার হয়েছিলেন। কিন্তু নদীর মাঝামাঝি পৌঁছতেই রাজার জাদুকরেরা তাদেরকে উদ্দেশ্য করে অগ্নিবাণ ছুড়তে থাকে। হযরত শাহ জালালও নিজের অলৌকিক ক্ষমতার প্রয়োগে অন্ধকার জালের সৃষ্টি করে প্রতিহত করেন শত্রুদেরকে। শাহ জালাল সঙ্গীদেরকে নিয়ে বরাক নদীর পাড়ে পৌঁছেও জায়নামাজ ব্যবহার করে নদী পার হন।

রাজা গৌড় গোবিন্দ যখন দেখলো তার পরাজয় সুনিশ্চিত তখন তিনি তার রাজ্যের কাছে অবস্থিত "হারং হুরং" নামের একটি সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। সেই সুড়ঙ্গকে ঘিরে সেসময় খুব ভয়ংকর লোকশ্রুতি প্রচলিত ছিলো। সুড়ঙ্গটি ছিলো ৩৩ কোটি দেবতার বাসস্থান। পূর্বে এর মধ্যে যেই গেছে, কেউ জীবিত ফিরে আসেনি। সেজন্য লোকজন এর ধারেকাছেও যেতো না। উপায় না পেয়ে রাজা এই সুড়ঙ্গ পথেই পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। ভেতরে প্রবেশের পর রাজা সেখানে অবস্থিত ৩৩ কোটি দেবতার প্রত্যেককে ১টাকা করে দক্ষীনা দেন এবং এভাবে তিনি সেই সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যান।