English
Radha and Krishna, divinely destined to be born as humans on Earth after a prolonged existence together in heaven, began their earthly journey. Radha, at a young age, was married to Ayan Gopa, a eunuch. While Ayan tended to his duties herding cows, Radha was cared for by his aunt, Barai. Alongside other young women, Radha would travel to Mathura to sell curd and milk.
During one of these trips, Barai lost track of Radha. In her search, she approached Krishna, inquiring if he had seen a beautiful girl, and described Radha's appearance. Krishna, upon hearing about Radha's beauty, experienced a sense of unease. He persuaded Barai to convey a romantic proposal to Radha, adorned with gifts of betel leaves and flowers. However, Radha, committed to her marriage, declined the offer. Krishna, in a bold move, blocked Radha and her friends' path as they headed to Mathura to sell curds, playfully demanding a toll for crossing the river. His cheeky demand was that he be allowed to sleep with Radha. Radha firmly refused this proposition. In an attempt to avoid further advances, Radha contemplated cutting her hair to make herself less appealing and fled into the forest. Krishna, determined not to be deterred, followed her into the forest and made love to her.
As autumn arrived, the roads dried up, making them safer and less treacherous. This change in weather allowed people to travel to Mathura on foot to sell milk and curd. However, Radha, once a regular on these trips, stopped leaving her house. She kept the details of her interactions with Krishna a secret from her mother-in-law and husband, out of fear and shame. Krishna, noticing Radha's absence, began to feel a sense of desperation. He cleverly enlisted Barai's help to persuade Radha's mother-in-law to permit Radha to go outside and sell milk and curd. Following her mother-in-law's instructions, Radha ventured outside, but the physical strain of carrying milk and curd, combined with the scorching heat of the sun, left her exhausted. At this moment, Krishna, disguised, approached Radha and offered his assistance in exchange for an embrace. Radha, quickly realizing the deception, cunningly made false promises to get the work done. Krishna, filled with hope, followed Radha, accompanying her to Mathura.
On their return journey from Mathura, Krishna reminded Radha of the embrace she had promised him. Radha, with her quick wit, suggested that it was still too hot and asked Krishna to hold an umbrella over their heads as they walked to Vrindavan. Despite feeling embarrassed and humiliated, Krishna, holding onto hope, agreed to hold the umbrella. However, Radha did not fulfill his expectation, which left Krishna feeling hurt. Choosing not to react in anger towards Radha, Krishna decided to take a different path. He set out to beautify Vrindavan, hoping to charm Radha. His efforts paid off, as Radha and her friends, mesmerized by the beauty of Vrindavan, forgot their earlier displeasure with Krishna.
Nearby, the River Yamuna flowed through Vrindavan, but its waters were poisoned by Kaliya, a five-headed snake residing in the river. In a bold move, Krishna dove into the Yamuna to confront Kaliya. By divine intervention, Krishna overpowered Kaliya, driving him away to the Southern Ocean. However, after his dive, Krishna did not resurface, leading everyone to believe he had drowned. In reality, Krishna had secretly swum to the shore and was sitting on a kadam tree. Meanwhile, Radha and her friends frantically searched for him in the water. Seizing the opportunity, Krishna discreetly took Radha's elephant-pearl-necklace from the riverbank and climbed back up the tree.
Radha, aware of Krishna's antics, decided to take her grievances to Krishna's foster mother, Yashoda. This action, however, resulted in Krishna becoming annoyed with Radha, and Radha, in turn, was displeased with Krishna. During this time, Barai suggested to Krishna that he should adopt a different strategy and try to win Radha's heart with a love spell. Krishna acquired a divine bow from Kamadeva, the god of love, and shot a flower arrow at Radha. Upon being struck by the love-arrow, Radha immediately lost consciousness. Krishna then revived Radha, who, upon regaining consciousness, found herself deeply in love with Krishna. Krishna often played the flute, using its melody to attract Radha. The sound of Krishna's flute had a profound effect on Radha, disrupting her cooking and leaving her mind in turmoil, much like a potter's furnace. She found herself unable to sleep and would faint at the mere sight of Krishna in the morning. Barai advised Radha to steal Krishna's flute, as he often fell asleep after playing it all night. Barai believed this was the only solution to Radha's troubles. Following this advice, Radha managed to take the flute. However, Krishna, being astute, quickly figured out who the thief was. Radha then told Krishna that she would return the flute only if he made a promise in front of Barai to never disobey her and never leave her side. Krishna agreed to these terms and thus regained his flute.
Krishna then began to show indifference towards Radha, and as months passed with the arrival and departure of spring, he was nowhere to be seen. This prolonged absence led Radha to lose hope of ever seeing Krishna again. In her longing, Radha asked Barai to help bring Krishna back. She also ventured out herself, under the pretext of selling milk and curd, in search of Krishna. Eventually, she found Krishna playing the flute in Vrindavan.
Confronted by Radha, Krishna expressed his feelings of hurt, telling her, "You have insulted me many times. You made me carry burdens like a common man and humiliated me in front of my mother. That's why I am angry with you." In response, Radha, recognizing her past actions, pleaded for forgiveness, saying, "I was a foolish young girl then. Please forgive me. I cannot endure another day without you. Even if it's with anger, please look at me just one more time." Krishna, considering her plea, stated that if Barai advised him to show affection to Radha, he could consider her request. Finally, Barai stepped in, preparing Radha for a reunion with Krishna.
When Radha falls asleep, Krishna leaves her and goes to Mathura to kill Kamsa. Upon waking up and not finding Krishna, Radha becomes distraught once more. At Radha's request, Barai searches for Krishna and eventually finds him in Mathura. There, Barai conveys Radha's devastation and pleads with Krishna to return to her. However, Krishna, no longer wishing to return to Vrindavan or accept Radha, refuses. He states that he can give up everything but cannot tolerate harsh words. Saying this, he departs from the place.
বাংলা
রাধা ও কৃষ্ণ স্বর্গে বহুকাল একসঙ্গে থাকার পরে ঈশ্বরের ইচ্ছায় পৃথিবীতে মানুষ রূপে জন্ম নেয়। বালিকা বয়সে নপুংসক আয়ন গোপের সঙ্গে রাধার বিয়ে হয়।
আয়ান গো-চারণ করতে গেলে রাধাকে তার পিসি, বড়াই, এর তত্বাবধানে রাখা হয়। অন্যান্য বালিকাদের সাথে রাধা মথুরাতে দই-দুধ বিক্রি করতে যায়। বড়াই পথে রাধাকে হারিয়ে ফেলে এবং রাধার রূপের বর্ণনা দিয়ে কৃষ্ণ-কে জিজ্ঞাসা করে এমন রূপসীকে দেখেছে কিনা। রাধার রূপের বর্ণনা শুনে কৃষ্ণ পূর্বরাগ অনুভব করে। সে বড়াই-কে বুঝিয়ে রাধার জন্য পান ও ফুলের উপহার দিয়ে প্রেমের প্রস্তাব পাঠায়। কিন্তু বিবাহিত রাধা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। কৃষ্ণ দই-দুধ বিক্রির জন্য মথুরাগামী রাধা ও গোপীদের পথ আটকায়। তার দাবি নদীর ঘাটে পারাপারের জন্য শুল্ক দিতে হবে। অন্যথায় রাধার সঙ্গে মিলিত হতে দিতে হবে। রাধা কোনোভাবেই এ প্রস্তাবে রাজি হয় না। রাধা নিজের রূপ কমাবার জন্য নিজের চুল কেটে ফেলতে চেয়ে কৃষ্ণের হাত থেকে বাঁচার জন্য বনে দৌড় দেয়। কৃষ্ণ পিছু ছাড়ার পাত্র নয়। কৃষ্ণ রাধাকে ধাওয়া করে জোর পূর্বক মিলন করে।
শরৎকালের শুকনো পথঘাট। তাই হেঁটেই মথুরাতে গিয়ে দুধ-দই বিক্রি করা যায়। কিন্তু রাধা আর বাড়ির বাইরে আসে না। আগের ঘটনাগুলো শাশুড়ি বা স্বামীকে ভয়ে এবং লজ্জায় খুলে বলে নি। রাধাকে দেখতে না পেয়ে কৃষ্ণ ছটফট করতে থাকে। কৃষ্ণ বড়াই-কে দিয়ে রাধার শাশুড়িকে বোঝায় যে ঘরে বসে থেকে কি হবে? রাধা দই দুধ বেঁচে কয়টা পয়সা তো আনতে পারে। শাশুড়ির নির্দেশে রাধা বাইরে বের হয় কিন্তু প্রচণ্ড রোদে কোমল শরীরে দুধ-দই বহন করতে গিয়ে রাধা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ সময় কৃষ্ণ ছদ্মবেশে মজুরি করতে আসে এবং মজুরির বদলে রাধার আলিঙ্গন কামনা করে। রাধা এই চালাকি বুঝতে পারে এইজন্য সে কাজ আদায়ের জন্য মিথ্যা আশ্বাস দেয়। তাই কৃষ্ণ আশায় আশায় রাধার পিছু পিছু ভার নিয়ে মথুরা পর্যন্ত আসে।
দুধ-দই বেচে মথুরা থেকে এবার ফেরার পালা। কৃষ্ণ তার প্রাপ্য আলিঙ্গন চায়। রাধা চালাকি করে বলে এখনো প্রচন্ড রোদ তুমি আমাদের মাথায় ছাতা ধরে বৃন্দাবন পর্যন্ত চলো। কৃষ্ণ ছাতা ধরতে লজ্জা ও অপমান বোধ করছিল। তবু আশা নিয়ে কৃষ্ণ ছাতা ধরেই চলল কিন্তু তার আশা পূর্ণ করে নি রাধা। রাধার এই আচরণ কৃষ্ণেকে কষ্ট দেয়। সে অন্য পথ অবলম্বন করে। কৃষ্ণ গালিগালাজ না করে রাধার সাথে বরং বৃন্দাবনকে অপূর্ব শোভায় সাজিয়ে তুলতে চায়। রাধা ও গোপীরা সেই শোভা দর্শন করে কৃষ্ণের উপর রাগ ভুলে যায়।
বৃন্দাবনের উপর দিয়ে যমুনা নদী প্রবাহিত। রাধা ও গোপীরা সেখানে জল আনতে যায়। কিন্তু যমুনায় কালিয়-নাগ বাস করে। কালিয়-নাগ হলো পাঁচ মাথাওয়ালা সাপ। কালিয়-নাগের বিষে যমুনার জল বিষাক্ত। কৃষ্ণ কালিয়-নাগ কে তাড়াতে নদীর জলে ঝাঁপ দেয়। দৈব ইচ্ছায় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে কালিয়-নাগ পরাস্ত হয় এবং দক্ষিণ সাগরে বসবাস করতে চলে যায়। এদিকে কৃষ্ণ যমুনার জলে নেমে ডুব দিয়ে আর ওঠে না। সবাই মনে করে কৃষ্ণ ডুবে গেছে কিন্তু কৃষ্ণ লুকিয়ে কদম গাছে বসে থাকে। রাধা ও সখীরা জলে নেমে কৃষ্ণকে খুঁজতে থাকে। এই সুযোগে কৃষ্ণ নদীতীরে রাখা রাধার গজমতির হার চুরি করে আবার গাছে গিয়ে বসে।
রাধা কৃষ্ণের চালাকি বুঝতে পারে। হার না পেয়ে রাধা কৃষ্ণের পালিত মা যশোদার কাছে নালিশ করে। এতে কৃষ্ণ রাধার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। রাধাও কৃষ্ণের প্রতি প্রসন্ন হয়। এই সময় বড়াই কৃষ্ণ কে বুদ্ধি দিল কৃষ্ণ যেন শক্তির পথ ছেড়ে মদন বান প্রেমে রাধাকে বশীভূত করে। তার কথা মতো কৃষ্ণ ফুলে বানানো বিশেষ ধনুক নিয়ে কদম তলায় বসে থাকে। রাধা কৃষ্ণের প্রেম বানে মূর্ছিত ও পতিত হয়। এরপর কৃষ্ণ রাধাকে চেতনা ফিরিয়ে দেয়। রাধা কৃষ্ণ প্রেমে কাতর হয় এবং কৃষ্ণকে খুঁজে ফেরে।
কৃষ্ণ রাধাকে আকৃষ্ট করার জন্য সময়ে-অসময়ে বাঁশিতে সুর তোলে। কৃষ্ণের বাঁশি শুনে রাধার রান্না এলোমেলো হয়ে যায়। মন কুমারের চুল্লির মত পুড়তে থাকে। রাত্রে ঘুম আসেনা। ভোরবেলা কৃষ্ণ অদর্শনে রাধা মূর্ছা যায়। বড়াই রাধাকে পরামর্শ দেয় সারারাত বাঁশি বাজিয়ে সকালবেলায় কৃষ্ণ কদমতলায় বাঁশি মাথার পাশে রেখে ঘুমায়। তুমি সেই বাঁশি চুরি করো। তবেই সকল সমস্যার সমাধান হবে। রাধা তাই করল। কিন্তু কৃষ্ণ বুদ্ধিমান তাই বাঁশি চোর কে তা বুঝতে তার কষ্ট হলোনা। রাধা-কৃষ্ণকে বলে বড়াই কে সাক্ষী রেখে কৃষ্ণের কথা দিতে হবে যে সে কখনো রাধার কথার অবাধ্য হবে না এবং রাধাকে ত্যাগ করে যাবে না তবেই বাঁশির সন্ধান মিলতে পারে। কৃষ্ণ কথা দিয়ে বাঁশি ফিরে পায়।
তারপর কৃষ্ণ রাধার উপর উদাসীনতা প্রকাশ করে। মধুমাস সমাগত তাই রাধা বিরহ অনুভব করে। রাধা বড়াই কে বলে কৃষ্ণ কে এনে দিতে। দুধ-দই বিক্রির ছল করে রাধা নিজেও কৃষ্ণ-কে খোঁজার জন্য বের হয়। অবশেষে বৃন্দাবনে বাঁশি বাজানো অবস্থায় কৃষ্ণকে পাওয়া যায়। কৃষ্ণ রাধাকে বলে তুমি আমাকে নানা সময় লাঞ্ছনা করেছ। ভার বহন করিয়েছো। মা এর কাছে আমার নামে বিচার দিয়েছো তাই তোমার ওপর আমার মন উঠে গেছে। রাধা তখন বলে তখন আমি বালিকা ছিলাম আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমার বিরহে মৃতপ্রায়। রাগীভাবে হলেও তুমি আমার দিকে তাকাও। কৃষ্ণ বলে বড়াই যদি আমাকে বলে যে তুমি রাধাকে প্রেম দাও তাহলে আমি তোমার অনুরোধ রাখতে পারি। অবশেষে বড়াই রাধাকে সাজিয়ে দেয় এবং রাধা কৃষ্ণের মিলন হয়।
রাধা ঘুমিয়ে পড়লে কৃষ্ণ রাধাকে রেখে কংস বধ করার জন্য মথুরাতে চলে যায়। ঘুম থেকে উঠে কৃষ্ণ-কে না দেখে রাধা আবার বিরহ কাতর হয়ে পড়ে। রাধার অনুরোধে বড়াই কৃষ্ণের সন্ধানে যায় এবং মথুরাতে কৃষ্ণ কে পেয়ে যায় এবং সেখানে অনুরোধ করে যে রাধা তোমার বিরহে মৃতপ্রায় তুমি ওকে বাঁচাও। কিন্তু কৃষ্ণ বৃন্দাবনে আর যেতে চায় না এবং রাধাকে ও গ্রহণ করতে চায়না। কৃষ্ণ বলে যে আমি সব ত্যাগ করতে পারে কিন্তু কটু কথা সহ্য হয় না। এই বলে সে সেখান থেকে চলে যায়।