The Mad King

The Mad King

Bengali Title

পাগলা রাজা

Category
Indigenous Folktale

English

Around the beginning of the 17th century, an extraordinary person named Sattua Borua ruled over the Chakma kingdom. He was a skilled yoga practitioner. It is said that he attained such a level of mastery over his own body that he could take out his intestines, wash them, and put them back in their place. He kept these abilities of his a secret. Even when he bathed, he did so behind closed curtains. One day, his wife, the queen, decided to peek behind the curtains out of curiosity. She was so horrified at the sight of the king's intestines out in the open that she let out a deafening scream. Out of fear of being exposed, the king tried to put back his intestines hastily. However, something went wrong in the process, and as a result, the king lost his sanity.

After that incident, the king became an entirely different person. He became extremely irritable and aggressive. He would have men killed at the smallest of excuses. The situation got so bad that the king's royal advisors began plotting an assassination. One day, when the king was being carried to the temple on his palki, his men began to yell, "Run, wild elephants are on the loose!" The king stepped out to have a look. But alas, an assassin was perched on top of his palki. At the right moment, he jumped off and severed the king's head with one clean swipe of his blade. The queen helped cover up the murder by spreading rumors of the king being killed by wild elephants. To avoid drawing further attention, they decided to forego cremation and buried the king's body in secret.

A few days later, the king's daughter, Princess Omolongi, began seeing visions of her deceased father in her dreams. In these visions, the late king foretold the day when he would be reunited with his severed head and rise up to take revenge on the people who plotted his assassination. She shared her visions with the queen, who became quite disturbed. The king was a devoted worshipper of the gods, so it was entirely conceivable that he could miraculously come back to life. After consulting with her ministers, the queen decided not to take any chances. The king's body was dug up, and exactly as the visions foretold, the severed head had joined with the rest of the body. Seeing this, the queen immediately ordered the body to be chopped into seven pieces and spread around the nearby mountains and rivers. It is rumored that one such piece is still buried inside a hill called "Pagala Mura" in the Alikadam Upazilla of Bandarban.

বাংলা

সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে চাকমাদের একজন রাজা ছিলেন সাত্তুয়া বড়ুয়া। তিনি যোগসিদ্ধ ছিলেন এবং স্নানের সময় যোগবলে দেহের ভিতর থেকে নাড়িভুঁড়ি বের করে পানিতে ধুয়ে মুছে তারপর ঐগুলি আবার যথাস্থানে ঢুকিয়ে রাখতেন। এ কাজ তিনি করতেন খুবই গোপনে, কেউই টের পেত না । স্নানও করতেন তিনি ঘরের ভিতরে এবং পর্দার আড়ালে। তাঁর স্ত্রী, মানে রাণী, একদিন কৌতুহল বশতঃ পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থেকে রাজার স্নান দেখছিলেন। রাজা পেটের ভেতর থেকে তার নাড়িভুঁড়ি বের করা মাত্র রাণী সে দৃশ্য দেখে ভয়ে চিৎকার করে উঠলেন। তাঁর চিৎকার শুনে রাজা তাড়াতাড়ি নাড়িভুঁড়ি দেহের ভিতরে বসালেন কিন্তু তাড়াহুড়ায় ঠিকমত বসাতে পারলেন না। ফলে কিছু দিন যেতে না যেতে রাজার মাথা খারাপ হয়ে গেল।

পাগল হয়ে রাজা শুরু করলেন নানা অত্যাচার এবং মানুষ হত্যা। ফলে তার ভয়ে লোকজন তার সামনে থেকে পালিয়ে বেড়াতে লাগল। এমনি ভাবে অনেক দিন চলে গেল। রাজার অত্যাচার প্রজারা সহ্য করলেও পাত্রমিত্র এবং অন্যান্য ক্ষমতাবান সভাষদরা সহ্য করতে পারলেন না। তারা রাজকার্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বিশ্বস্থ লোকজনদের সরিয়ে রাজাকে হত্যা করার জন্য সুযোগ খুঁজতে লাগল।

একদিন সুযোগ মিলেও গেল। রাজার ছিল দেব-দেবীদের প্রতি অগাধ ভক্তি-শ্রদ্ধা। তাই প্রায়ই তিনি মন্দিরে যেতেন। একদিন রাজা যখন পালকিতে চড়ে মন্দিরে পূজা দিতে যাচ্ছিলেন, হঠাৎ মন্ত্রীরা "পাগলা হাতী পাগলা হাতী" করে চেচিয়ে উঠল। রাজা ব্যাপার কি দেখার জন্য পালকির বাইরে যেই মাথা টা বের করেছেন, অমনি পালকির পিছনে লুকিয়ে থাকা ঘাতক তরবারীর আঘাতে তাঁর মাথা দেহ থেকে ছিন্ন করে দিলো। রাজা নিহত হলেন। এ খবর চারিদিকে বিদ্যুৎ বেগে ছড়িয়ে পড়ল। রাণী এবং মন্ত্রীরা রাজ্যময় গুজব ছড়ালো যে, রাজা মন্দিরে যাওয়ার পথে পাগলা হাতীর আক্রমনে নিহত হয়েছেন। রাজাকে প্রচলিত রীতি অনুসারে চিতায় দাহ করার পরিবর্তে মাটি চাপা দেওয়া হলো এবং জায়গাটি অল্প কয়েকজন ছাড়া কেউই জানল না।

রাজার ছিল একটি মেয়ে নাম অমলঙ্গী। সে ছিল বড় আদরের। সে পরপর সাত রাত রাজাকে স্বপ্নে দেখল। রাজা তাকে স্বপ্নে বলছেন অতি শীঘ্রই তাঁর দেহের সাথে কাটা মুণ্ডটি জোড়া লাগবে এবং তিনি আবার বেঁচে উঠবেন। কন্যার মুখে এমন স্বপ্নের খবর শুনে রাণী ভয়ে শুকিয়ে গেল। তাঁর মুখ ভয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেল এবং অন্যান্য মন্ত্রীদেরও দেহ ছেড়ে প্রাণ বেরোয় এমন অবস্থা। কারণ সবার বিশ্বাস ছিল, রাজা ছিলেন তান্ত্রিক সাধক, কাজেই তার পক্ষে আবার বেঁচে উঠা এমন কোন আশ্চর্য ব্যাপার নয়। রাণীসহ মন্ত্রীরা একদিন দলবলে ঢাল তলোয়ার নিয়ে রাজার কবরে ছুটলেন। এবার তাঁদের পক্ষে আগের মত আর গোপনীয়তা রক্ষা করা সম্ভব হলো না।

কারণ তাঁরা এতো বেশি ভয় পেয়েছিলেন যে তাঁরা রাজার কবরে রাতের বেলায় না গিয়ে অনেক লোকজনসহ দিনের বেলায় গিয়েছিলেন। ফলে প্রকাশ্যে দিনের বেলায় রাজার কবর খোঁড়া হলো। আর সবাই বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করল, সত্যি সত্যিই রাজার কাটা মুন্ডটি তার দেহে জোড়া নেয় নেয় অবস্থা। এই দৃশ্য দেখে রাণী তৎক্ষণাৎ ভীষণ আতঙ্কে রাজার দেহকে খন্ড খন্ড করার আদেশ দিলেন। রাণীর আদেশে রাজার দেহকে সাতটি বৃহৎ খন্ডে খন্ডিত করে বিভিন্ন পাহাড় এবং নদীতে ফেলে দেওয়া হলো। লোকের বিশ্বাস এমনি একটি দেহখন্ড নাকি "পাগালা মুড়া'য়" মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। সেই পাগালা মুড়া পাহাড়টি আজও ঐ ঘটনার সাক্ষী হয়ে বান্দরবান জেলার আলিকদম উপজেলার অনতিদূরে দাঁড়িয়ে আছে।